লোডশেডিং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

0
12

অনলাইন ডেস্ক : গ্রামে-গঞ্জে আট থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে দাবি করে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। সরকার দাবি করছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা রয়েছে, তাহলে এই বিদ্যুৎ কই গেল সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে তার নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে একদিন থেকে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জাপা মহাসচিব।

রোববার (৫ মে) সন্ধ্যায় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে চুন্নু এসব কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলে ধরে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

তার এই বক্তব্যের সময় সরকারি দলের কোনো কোনো সদস্য আপত্তি করেন। জবাবে চুন্নু বলেন, চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

জাপা মহাসচিব অভিযোগ করেন, ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।’

চুন্নু বলেন, ‘বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধু দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।’

এ সময় বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর দেখা যায়, কোনো গাড়ির ফিটনেস নেই। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। মন্ত্রী যদি একটু ‘স্ট্রং’ হন। পুরোনো গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অটো (ব্যাটারিচালিত রিকশা) রাস্তায় না চললে মানুষ এভাবে মারা যাবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে